শনিবার, ১৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৫

চমেকে ৭৫ শিক্ষার্থী বহিষ্কার, বেশির ভাগই ছাত্রলীগের

নিজস্ব প্রতিবেদক

শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগে চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজের (চমেক) ৭৫ জন শিক্ষার্থীকে বিভিন্ন মেয়াদে বহিষ্কার করেছে কর্তৃপক্ষ। এদের মধ্যে ১৪ জন শিক্ষানবিশ চিকিৎসক রয়েছেন। একাডেমিক কাউন্সিলের সভায় এ সিদ্ধান্ত হয়েছে বলে সোমবার এক বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।

বহিষ্কারাদেশের চিঠিতে বলা হয়, ‘অভিযুক্ত শিক্ষার্থীদের যথেচ্ছাচারী আচরণের কারণে কলেজের সুষ্ঠু শিক্ষার পরিবেশ চরমভাবে বিঘ্নিত হয়েছে। তারা সংঘবদ্ধ হয়ে কলেজ ক্যাম্পাস ও ছাত্রাবাসগুলোতে সংঘাতময় পরিস্থিতি সৃষ্টি করে। ইতোপূর্বে কিছু শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ এলাকায় সংঘটিত সংঘাতের কারণে বিভিন্ন মেয়াদে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। শাস্তিপ্রাপ্ত শিক্ষার্থীসহ বহিষ্কার হওয়া শিক্ষার্থীরা কলেজ ক্যাম্পাস ও ছাত্রাবাসের ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধ থাকার পরও ছাত্র রাজনীতির নাম ভাঙিয়ে একক কর্তৃত্ব, গোষ্ঠীগত আধিপত্য এবং ব্যক্তিগত হিরোইজম প্রদর্শনের জন্য বিভিন্ন নিন্দনীয় ঘটনা ঘটায়।’

‘এ অবস্থায় এসব শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে ছাত্রাবাসে অবৈধ অনুপ্রবেশ, অবৈধভাবে রুম দখল, অঙ্গীকার ভঙ্গসহ কলেজের শিক্ষার পরিবেশ নষ্ট, মারধর ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে যুক্ত থাকা সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হওয়ায় বিধি মোতাবেক বিভিন্ন মেয়াদে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হলো। ফাইনাল প্রফেশনাল পরীক্ষায় উত্তীর্ণ অভিযুক্ত শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে পরিচালক মহোদয় প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন,’ বলা হয় আদেশে।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গতকাল রোববার একাডেমিক কাউন্সিলের সভায় ৮৬ শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে শাস্তির সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়। সভায় সভাপতিত্ব করেন চমেক অধ্যক্ষ অধ্যাপক মোহাম্মদ জসিম উদ্দিন।

৮৬ জন শিক্ষার্থীর মধ্যে দুই বছরের জন্য বহিষ্কার করা হয় ৭ জনকে। ১৫ জনকে দেড় বছরের জন্য, ৩৯ জনকে এক বছরের জন্য, ১৪ জনের জন্য ৬ মাসের জন্য বহিষ্কারাদেশ দেওয়া হয়। ১১ জনের কাছ থেকে অভিভাবক ও নিজের মুচলেকা নেওয়া হবে।

শাস্তিপ্রাপ্তদের বেশির ভাগই সম্প্রতি নিষিদ্ধঘোষিত ছাত্রসংগঠন ছাত্রলীগের নেতা-কর্মী ও সমর্থক। তারা নগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আ জ ম নাছির উদ্দীন ও সাবেক শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরীর অনুসারী হিসেবে পরিচিত।

বিজ্ঞপ্তিতে অধ্যক্ষ জসিম উদ্দিন ও চমেক হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোহাম্মদ তাসলিম উদ্দীনের স্বাক্ষর রয়েছে। ৮৬ জনের মধ্যে যারা ইতোমধ্যে এমবিবিএস পাস করে ইন্টার্ন করছেন, তাদের বিষয়ে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। এর মধ্যে ১৭ জন বিডিএসের শিক্ষার্থী।

পরিচালক বিগ্রেডিয়ার জেনারেল তসলিম উদ্দিন বলেন, ‘দেড় মাস আগে অধ্যাপক ডা. হাসানুজ্জামানকে প্রধান করে ১২ সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছিল। সেই কমিটির প্রতিবেদনের সুপারিশে ১৪ ইন্টার্ন চিকিৎসকসহ কলেজের বিভিন্ন শিক্ষাবর্ষের ৭৫ শিক্ষার্থীকে বহিষ্কার করা হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় এ শাস্তি দেওয়া হয়।’

সর্বশেষ গত বছরের ১৬ মার্চ চার শিক্ষার্থীকে হোস্টেলে বেঁধে নির্যাতনের অভিযোগে ৭ জনকে বহিষ্কার করে কলেজ কর্তৃপক্ষ।

এনইউ/জই

সর্বশেষ

এই বিভাগের আরও খবর