চট্টগ্রামের কর্ণফুলী নদীর তলদেশে নির্মিত দেশের প্রথম টানেল নিয়ে যে ধরনের আশা ও সম্ভাবনার কথা বলা হয়েছিল, এক বছর পর তাতো দেখাই যাচ্ছে না, বরং প্রতিদিন কয়েকগুণ লোকসান গুনতে হচ্ছে।
গত বছরের ২৮শে অক্টোবর এই টানেলটি উদ্বোধনের পর থেকে দৈনিক আয় ব্যয়ের যে হিসাব দিচ্ছে টানেল কর্তৃপক্ষ, তাতে দেখা যাচ্ছে গড়ে প্রতিদিন যে টাকা আয় হচ্ছে এই টানেল থেকে, তারচেয়ে প্রায় চারগুণ বেশিই খরচ হচ্ছে।
বাংলাদেশের ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে যে সব উচ্চ খরচের প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হয়েছিল তার মধ্যে কর্ণফুলী নদীর নিচে এই বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান টানেল একটি। যেটি কর্ণফুলী টানেল নামে বেশি পরিচিত।
প্রায় দশ হাজার সাতশো কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত এই প্রকল্প কেন এত লোকসান গুনছে তা নিয়েই এখন প্রশ্ন উঠছে। এই কারণ খুঁজতে এরই মধ্যে সেতু সচিবসহ সংশ্লিষ্ট দপ্তরের কর্মকর্তারা প্রকল্পটি পরিদর্শনে গেছেন শনিবার।
ঋণের টাকায় নির্মিত হওয়ায় এই প্রকল্প থেকে থেকে আয় তো দূরের কথা, প্রতিদিনের ব্যয়ও তোলা সম্ভব না হওয়ায় টানেলটির ভবিষ্যৎ নিয়ে প্রশ্ন উঠছে।
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের যোগাযোগ ও সেতু উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান বলেন, “সঠিক সমীক্ষা ছাড়া একটি অবাস্তব প্রকল্প ছিল কর্ণফুলী টানেল। এখন কি করে এই লোকসান কমানো যায় আমরা সেই পর্যালোচনা করছি”। তবে এটিকে বিগত সরকারের একটি উচ্চাভিলাষী ও মারাত্মক ভুল প্রকল্প বলে মনে করছেন যোগাযোগ বিশেষজ্ঞরা।
তাহলে সংকটের সমাধান কী?
এমন প্রশ্নে যোগাযোগ বিশেষজ্ঞ ও বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক সামসুল হক বলেন, “মাটির তলদেশে নির্মিত যে কোন প্রকল্পে সময় বাড়ার সাথে সাথে অপারেশন খরচ অনেক অনেক বেড়ে যায়। সুতারং এই প্রকল্প উত্তরণের আর উপায় আছে বলে আমি মনে করি না।”
তবে, সড়ক বিভাগের সাথে সমন্বয় করে এই সংকট কাটাতে চেষ্টার কথা বলেছেন যোগাযোগ উপদেষ্টা মি. খান।
এনইউ/জই