প্রতিমা বিসর্জনের মধ্য দিয়ে শেষ হয়েছে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় অনুষ্ঠান শারদীয় দুর্গোৎসবের। প্রতিমা বিসর্জন উপলক্ষে বৃহত্তর চট্টগ্রামের বিভিন্ন স্থানে দর্শনার্থীদের ভিড় ছিল লক্ষ্যনীয়।
এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি লোকসমাগম হয়েছে কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতে। সেখানে ৩ লক্ষাধিক মানুষের সমাগম হয়েছে বলে দাবি প্রশাসনের। এছাড়া চট্টগ্রামের পতেঙ্গা সৈকত, পারকি সৈকত, পাথরঘাটা গঙ্গাবাড়ি এলাকায় কর্ণফুলীতে, কালুরঘাট এলাকায়, কাট্টলী রানী রাসমনি ঘাটসহ বিভিন্ন স্থানে প্রতিমা বিসর্জন দেয়া হয়েছে। এছাড়া বিভিন্ন নদী ও পুকুরেও প্রতিমা বিসর্জন দিয়েছেন ভক্তরা।
রোববার (১৩ অক্টোবর) দুপুর থেকে প্রতিমা বিসর্জন শুরু হয়। চলে রাত পর্যন্ত।
সনাতন ধর্মাবলম্বীদের বিশ্বাস, মানুষের মনের আসুরিক প্রবৃত্তি,কাম, ক্রোধ, হিংসা, লালসা বিসর্জন দেওয়াই মূলত বিজয়া দশমীর মূল তাৎপর্য। এ প্রবৃত্তিগুলোকে বিসর্জন দিয়ে একে অন্যের সঙ্গে ভ্রাতৃত্বের বন্ধনে আবদ্ধ হয়ে বিশ্বে শান্তি প্রতিষ্ঠা করাই এ আয়োজনের উদ্দেশ্য।
চন্ডীপাঠ, বোধন ও অধিবাসের মধ্য দিয়ে ষষ্ঠী তিথিতে ‘আনন্দময়ীর’ আগমনে গত ৯ অক্টোবর থেকে দেশের হিন্দু সম্প্রদায়ের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গোৎসবের সূচনা হয়। পরবর্তী ৫দিন দেশব্যাপী পূজামণ্ডপগুলোতে পূজা-অর্চনার মধ্যদিয়ে ভক্তরা দেবী দুর্গার প্রতি শ্রদ্ধার্ঘ্য নিবেদন করেন। এরপর প্রতিমা বিসর্জনের মধ্য দিয়ে উৎসবের শেষ হয়।
এবছর দেবী দুর্গার আগমন হয় দোলায় বা পালকিতে। দেবীর এই আগমনের ফলাফল হবে মড়ক। যা শুভ ইঙ্গিত নয়। এছাড়াও দেবী স্বর্গে গমন করবেন ঘোটকে বা ঘোড়ায়। শাস্ত্র মতে দেবীর গমন বা আগমন ঘোটকে হলে ফলাফল ছত্রভঙ্গ হয়। শাস্ত্রমতে এই ঘোটকে গমনের ফলে সামাজিক ও রাজনৈতিক বিশৃঙ্খলা অবস্থাকে ইঙ্গিত করে। এটি যুদ্ধ, বিগ্রহ, আশান্তি, বিপ্লবের ইঙ্গিত দিয়ে থাকে।
সনাতন ধর্মের বিশ্বাস অনুযায়ী, বিসর্জনের মধ্য দিয়ে দেবী ফিরে গেলেন স্বর্গলোকের কৈলাসে স্বামীর ঘরে। পরের বছর শরতে আবার তিনি আসবেন এই ধরণীতে যা তার বাবার গৃহ। প্রতিমা বিসর্জনের জন্য সব ধরণের নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।
প্রতিমা বিসর্জন ব্যবস্থাপনার প্রতি সন্তোষ জানিয়ে মহানগর পূজা উদযাপন পরিষদের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি অধ্যাপক অর্পণ কান্তি ব্যানার্জি বলেন, পতেঙ্গা সৈকতে পুলিশ ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীসহ প্রশাসন প্রতিমা বিসর্জনে সহায়তা করছে। চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন, মেডিক্যাল, ফায়ার সার্ভিস, রেড ক্রিসেন্টের টিমও ছিল। সবাই সর্বোচ্চ সহযোগিতা করেছে।
এনইউ/জই
ছবি: সাইদুল আজাদ