চট্টগ্রাম নগরীতে ডেঙ্গু পরিস্থিতি ক্রমান্বয়ে অবনিতির দিকে যাচ্ছে। আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে উদ্বেগজনক হারে। পরিস্থিতি মোকাবেলায় সাতটি এলাকাকে ‘রেড জোন’ ঘোষণা করেছে সিভিল সার্জন কার্যালয়। এলাকাগুলো হলো- কোতোয়ালী, বাকলিয়া, বায়েজিদ, বন্দর, পাহাড়তলী, খুলশী এবং চকবাজার।
সিভিল সার্জন কার্যালয়ের তথ্য মতে, বৃহস্পতিবার (১০ অক্টোবর) সকাল পর্যন্ত চট্টগ্রামে (এ বছর) মোট ১,৮৬৭ জন ডেঙ্গু রোগী শনাক্ত হয়েছেন। তবে গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে সে তালিকায় আরও ২১ জন যুক্ত হয়েছেন।
তথ্যানুযায়ী, সেপ্টেম্বর মাসে শুধুমাত্র কোতোয়ালীতেই ১০৬ জন ডেঙ্গু আক্রান্ত হিসেবে শনাক্ত হয়েছেন। অন্যান্য ‘রেড জোন’ এলাকাগুলোতেও আক্রান্তের সংখ্যা উল্লেখযোগ্য। বাকলিয়ায় ১০৩ জন, বায়েজিদে ৭৬ জন, বন্দরে ৩৩ জন, পাহাড়তলীতে ৩২ জন, খুলশীতে ২৩ জন এবং চকবাজারে ২০ জন ডেঙ্গু রোগী শনাক্ত হয়েছে।
অন্যান্য এলাকায় তুলনামূলক কম হলেও উল্লেখযোগ্য সংখ্যক রোগী শনাক্ত হয়েছে। এর মধ্যে পাঁচলাইশে ১৯ জন, হালিশাহারে ১৮ জন, পতেঙ্গায় ১৫ জন এবং চান্দগাঁওয়ে ১১ জন রয়েছে।
এছাড়াও, পাঁচটি এলাকাকে ‘ইয়েলো জোন’, সাতটি ‘ব্লু জোন’ এবং চারটি ‘গ্রিন জোন’ হিসেবে শ্রেণিবদ্ধ করা হয়েছে।
সিভিল সার্জন ডা. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী জানান, যেসব এলাকা থেকে ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা বেশি পাওয়া গেছে, সেগুলোকে ‘রেড জোন’ হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে। তিনি আরও বলেন, ‘আমরা সিটি কর্পোরেশনকে এই জোনগুলোর তালিকা প্রদান করেছি এবং মশা নিয়ন্ত্রণে তীব্রতর পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য অনুরোধ জানিয়েছি।’
শুধুমাত্র সেপ্টেম্বর মাসেই ৫১৫ জন ডেঙ্গু আক্রান্ত হিসেবে শনাক্ত হয়েছে, যাদের বেশিরভাগই ‘রেড জোন’ এলাকার বাসিন্দা।
এ বছর এ পর্যন্ত ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে মোট ১৬ জনের মৃত্যু হয়েছে, যার মধ্যে ১১ জনের মৃত্যু হয়েছে সেপ্টেম্বর মাসে।
স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করে বলেছেন, চলতি মাসে পরিস্থিতি আরও খারাপ হতে পারে।
কীটতত্ত্ববিদ এন্তেজার ফেরদৌস গণমাধ্যমকে জানান, একটি জরিপ পরিচালনার পর তারা কিছু এলাকাকে ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে চিহ্নিত করেছেন। তিনি আরও জানান, তারা তাদের রিপোর্ট সিটি কর্পোরেশনের কাছে জমা দিয়েছেন। মশা নিধন এবং মশার প্রজনন ক্ষেত্র ধ্বংস করার মতো তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য কর্পোরেশনকে অনুরোধ জানানো হয়েছে।
এনইউ/জই