চলতি সপ্তাহে নতুন করে বেড়েছে ব্রয়লার ও সোনালী মুরগির দাম। কেজিতে বেড়েছে ১০ টাকার বেশি। পাশাপাশি চড়া রয়েছে মাছের বাজার। এটি দৈনিক সুপ্রভাতের খবর।
পত্রিকাটির খবরে বলা হয়…
গত সপ্তাহ থেকে ডিম, মাছ, সবজিসহ প্রায়সব নিত্যপণ্যের বাজার ঊর্ধ্বমুখী দেখা যায় । এ সপ্তাহেও তার কোন পরিবর্তন দেখা যাচ্ছে না। বরং চলতি সপ্তাহে নতুন করে বেড়েছে ব্রয়লার ও সোনালী মুরগির দাম। কেজিতে বেড়েছে ১০ টাকার বেশি। পাশাপাশি চড়া রয়েছে মাছের বাজার।
বৃহস্পতিবার রেয়াজউদ্দিন বাজার ঘুরে দেখা যায়, গত সপ্তাহে বড় সাইজের ব্রয়লার মুরগির কেজি ১৫৫ টাকায় বিক্রি হলে তা বর্তমানে বিক্রি হচ্ছে ১৬৫ টাকা আর ছোট সাইজের ব্রয়লার বিক্রি হয়েছে ১৭০ থেকে ১৭৫ টাকা। সোনালি মুরগি ২৮০ থেকে ৩২০ টাকা। এছাড়া চড়া দরের মধ্যে স্থিতিতে রয়েছে গরু, মহিষ ও খাসির মাংসের দাম। গরুর মাংস বিক্রি হচ্ছে ৭০০ থেকে ৯৫০ টাকায়। আর খাসির মাংস ১ হাজার ২০০ টাকা।
মুরগি ব্যবসায়ী মো. আমিন বলেন, ফার্মে মুরগি উৎপাদন করলেও তা এখনো বিক্রির উপযোগী হয়নি। তাই সরবরাহ কিছুটা কমেছে। ফলে দাম বেড়েছে।
বাজারে চড়া দামের মধ্যে স্থিতিতে রয়েছে ডিমের দাম। প্রতি ডজন ডিম পাইকারিতে ১৪৫ টাকার ওপরে বিক্রি হলেও খুচরাতে ১৬০ টাকার থেকে ১৭০ টাকা ।
ডিম ব্যবসায়ী মো. ফয়েজ বলেন, এ সপ্তাহে পোল্ট্রিখাতে ডিমের সাময়িক সংকট রয়েছে। যার কারণে দাম কমছে না।
অন্যদিকে মাছের বাজার ঘুরে দেখা যায়, সপ্তাহের ব্যবধানে মাছের যোগান বেড়েছে কিন্তু সে অনুযায়ী দামের পরিবর্তন আসেনি। ৩০০ টাকা কেজির নিচে ভালো কোন মাছ বাজারে মিলছে না।
৫০০ গ্রাম ওজনের ইলিশ ৮০০ থেকে ৯০০ টাকা, ৭৫০ গ্রাম ওজনের ১ হাজার থেকে ১ হাজার ২০০ টাকা ।
আর কেজি ওজনের চেয়ে বেশি ইলিশ বিক্রি হচ্ছে ১ হাজার ৬০০ থেকে ১ হাজার ৮০০ টাকা। ছোট ও মাঝারি আকারের পাঙ্গাশ ২২০ থেকে ২৫০ টাকা যা গত দুই সপ্তাহ আগেও বিক্রি হয়েছিল ১৮০ টাকা। তেলাপিয়া মাছের কেজিও ২৫০ টাকা ছাড়িয়েছে। মাঝারি ও বড় মানের তেলাপিয়া প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ২৫০ থেকে ২৮০ টাকা। চাষের কই বিক্রি হয়েছে প্রতি কেজি ২৫০ টাকার ওপরে। আর ৬০০ থেকে ৭০০ গ্রাম ওজনের চাষের রুই মাছের দাম হাঁকানো হচ্ছে ২৮০ থেকে ৩০০ টাকা কেজি। বড়গুলো ৩৬০ থেকে ৪০০ টাকা।
মাছ ব্যবসায়ী রতন দে বলেন, মাছের সরবরাহ বাড়লে আড়তদারেরা খরচ বাড়তি দেখিয়ে দাম ধরে রেখেছে। যার কারণে মাছের দাম কমছে না।
এদিকে সবজির বাজারেও নেই স্বস্তির খবর। সপ্তাহের ব্যবধানে প্রায়সব সবজি কেজিতে ১০ টাকার মতো বেড়েছে।
বাজারে গোল বেগুন বিক্রি হচ্ছে ১২০ থেকে ১৩০ ও লম্বা বেগুন ৮০ থেকে ৯০ টাকা। কাকরোল, বরবটি, ঝিঙ্গা, ঢেঁড়স ৬০ থেকে ৭০ টাকা। গাজর ৮০ থেকে ১২০ টাকা । কাঁচামরিচের দাম কিছুটা কমে ১৪০ থেকে ১৫০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। আর বাড়তির দিকে আলুর বাজার। প্রতি কেজি মুন্সীগঞ্জের আলু বিক্রি হয়েছে ৫৫ থেকে ৬০ টাকা। লাল গোল আলু ৮০ থেকে ৯০ টাকা। এ সপ্তাহে কেজিতে আলুর দাম বেড়েছে ৫ টাকা ।
এদিকে বাজারে বেড়েছে বিদেশি পেঁয়াজের সরবরাহ। দামও দেশি পেঁয়াজের তুলনায় কম। পাইকারিতে পাকিস্তানি পেঁয়াজ ৯০ থেকে ৯২ টাকা ও মিসরের পেঁয়াজ ৮০ থেকে ৮২ টাকা কেজিতে। তবে আদা- রসুনের বাজারে কোন কমতির চিত্র দেখা যায়নি। গত সপ্তাহের মতো ১৮০ থেকে ২২০ টাকা ধরে বিক্রি হয়েছে মসলাজাত এ দুইটি পণ্য। গত একমাস ধরে বাড়তে থাকা চালের বাজারে কোন পরিবর্তন আসেনি। বাজারে এখনো মোটা ও সরু চালের দামও কেজিপ্রতি থেকে ৪ টাকা বাড়তি। নাজির ও মিনিকেট মানের সরু চাল বিক্রি হয়েছে ৬০ থেকে ৮০ টাকা। আর পাইজাম ও লতা মানের মাঝারি চাল ৫৫ থেকে ৬০ টাকা। আর স্বর্না ও ইরি মানের চালের দাম কোন পরিবর্তন আসেনি। এই চাল ৫২ থেকে ৫৫ টাকা।
এ বিষয়ে চাল ব্যবসায়ী মো. জামাল হোসেন বলেন, চালের দাম এক মাস ধরে বাড়ছে। প্রতি বস্তায় (৫০ কেজি) ২০০ থেকে ৩০০ টাকা বেড়েছে। মিলাররা ধান সংকটের অজুহাত দিচ্ছেন।
অপরদিকে সপ্তাহের ব্যবধানে সবজি পিঁয়াজ, মাছ মাংসের ভিন্ন ভিন্ন চিত্র দেখা গেলেও দীর্ঘদিন ধরে অপরিবর্তিত রয়েছে প্রায়সব মুদিপণ্যের বাজার। বাজারে ছোট মসুর ডাল ১৪০ টাকা, মোটা মসুর ডাল ১১০ টাকা, বড় মুগ ডাল ১৬০ টাকা, ছোট মুগ ডাল ১৮০ টাকা, খেসারি ডাল ১২০ টাকা, বুটের ডাল ১১৫ টাকা, ডাবলি ৮০ টাকা, ছোলা ১০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়েছে। প্রতি লিটার বোতলজাত সয়াবিন তেল ১৬৭ টাকা, খোলা সয়াবিন ১৪৭ টাকা, খোলা সরিষার তেল প্রতি লিটার ১৯০ টাকা, দুই কেজি প্যাকেট ময়দা ১৫০ টাকা, আটা দুই কেজির প্যাকেট ১৩০ টাকা।
এবারের বন্যায় ক্ষতি ১ লাখ ৫৩ হাজার হেক্টর জমির ফসল
ভয়াবহ বন্যায় কৃষি সেক্টরে মারাত্মক রকমের নেতিবাচক প্রভাব পড়তে শুরু করেছে। যা দেশের কৃষি উৎপাদনসহ খাদ্য নিরাপত্তায় বড় ধরনের প্রভাব ফেলবে। জমিতে লাগানো আমন ধান পুরোপুরি নষ্ট হয়ে গেছে। নষ্ট হয়ে গেছে বীজতলাও । আবার নতুন করে বীজতলা তৈরি করে চারা গজিয়ে চাষাবাদ করা আদৌ সম্ভব হবে কিনা তা নিয়েও সংশয় দেখা দিয়েছে। এটি দৈনিক আজাদীর খবর।
পত্রিকাটির খবরে বলা হয়…
স্মরণকালের ভয়াবহ বন্যায় কৃষি সেক্টরে মারাত্মক রকমের নেতিবাচক প্রভাব পড়তে শুরু করেছে। যা দেশের কৃষি উৎপাদনসহ খাদ্য নিরাপত্তায় বড় ধরনের প্রভাব ফেলবে। জমিতে লাগানো আমন ধান পুরোপুরি নষ্ট হয়ে গেছে। নষ্ট হয়ে গেছে বীজতলাও । আবার নতুন করে বীজতলা তৈরি করে চারা গজিয়ে চাষাবাদ করা আদৌ সম্ভব হবে কিনা তা নিয়েও সংশয় দেখা দিয়েছে।
কৃষি বিভাগ জানিয়েছে, চট্টগ্রামের কৃষি অঞ্চলে চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, ফেনী, নোয়াখালীসহ ৫টি জেলা, ৪২টি উপজেলা ও ৩টি মেট্রোথানার সমন্বয়ে গঠিত। ১৪ হাজার ৪ শত ২৩ দশমিক ২২ বর্গ কিলোমিটার আয়তনের বিস্তৃত এই অঞ্চলে প্রায় দুই কোটি মানুষের বসবাস। অত্র অঞ্চলের প্রধান ফসল ধান। এছাড়া চা, ভূট্টা, গোলআলু, বাদাম, তরমুজসহ বিভিন্ন ফলমূল ও শাকসব্জী উৎপাদিত হয়। ফেনী ও কক্সবাজার জেলা মূলত ধান উৎপাদন এলাকা। চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ড, মীরসরাই, ফটিকছড়ি অঞ্চলেও প্রচুর ধানচাষ হয়ে থাকে । চট্টগ্রাম খাদ্য ঘাটতির একটি অঞ্চল। এখানে প্রচুর বাইরের লোকের বসবাস হওয়ায় এই অঞ্চলটিতে খাদ্য ঘাটতি রয়েছে। যা দেশের অন্যান্য অঞ্চল থেকে এনে যোগান দিতে হয়।
চট্টগ্রামে ধানচাষের একটি বড় অংশ দখল করে থাকে আমন। প্রচুর ফলন আসে এই মৌসুমের চাষ থেকে। কৃষকেরা তাদের জমিতে একটু আগেভাগে আমন লাগিয়ে দ্রুত ফসল ঘরে তুলতে চান। এবারও প্রচুর জমিতে আমনের চাষ হয়েছিল চট্টগ্রাম কৃষি অঞ্চলের এলাকাগুলোতে।
চট্টগ্রাম কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের একজন কর্মকর্তা জানান, হাজার হাজার একর আমন চাষ সম্পন্ন করে কৃষকেরা উৎসবমুখর ভাবে ঘরে ফিরলেন, তখনই ভয়াল বন্যা সব তছনছ করে দিল।
শুধু চট্টগ্রামেই প্রায় ৫শ’ কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে উল্লেখ করে ওই কর্মকর্তা বলেন, আসলে টাকার অংকে এই ক্ষতি নিরুপন করা যাবে না। ফসল প্রাপ্তি নিয়ে যে অনিশ্চয়তা তৈরি হলো তা সামাল দেয়া কঠিন হবে। তিনি বলেন, একজন কৃষক তার সর্বস্ব খরচ করে চাষাবাদ করলেন। তা ধ্বংস হয়ে গেল । এখন নতুন করে আবার চাষ করার মতো অবস্থা ওই কৃষকের নেই । হয়তো দেখা যাবে জমিটি খালি পড়ে রয়েছে। কোন ফসলই ওই জমি থেকে এই মৌসুমে আর পাওয়া যাবে না। এই ক্ষতির প্রভাব ব্যাপক বলেও তিনি মন্তব্য করেন। কৃষি বিভাগ থেকে বলা হয়েছে, চট্টগ্রাম কৃষি অঞ্চলে এবারকার বন্যায় সর্বমোট ১ লাখ ৫৩ হাজার ১০৩ হেক্টর জমির ফসলের ক্ষতি হয়েছে। এরমধ্যে অনেক জমিই খালি পড়ে থাকবে বলেও সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা উল্লেখ করেন ।
কৃষি বিভাগের কাছ থেকে প্রাপ্ত হিসেব মতে, সীতাকুণ্ড, মীরসরাই, ফটিকছড়ি, লোহাগাড়া, সাতকানিয়া, চন্দনাইশ ও বাঁশখালী উপজেলার ধানী জমিতে বন্যা মারাত্মকভাবে প্রভাব ফেলেছে। উক্ত সাত উপজেলায় বন্যার পানিতে তলিয়ে গেছে ১ হাজার ৯২২ হেক্টর সবজি বাগান। সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে আউশ ও আমন খেত। আমন ধানের উৎপাদনে লক্ষ্যমাত্রায় অর্জিত না হওয়ার শঙ্কা দেখা দিয়েছে। চট্টগ্রামের বিভিন্ন অঞ্চলে আমনের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে বলে উল্লেখ করে কৃষি অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা বলেছেন, টাকার অংকে চট্টগ্রামে আমনের ক্ষতি ২৫২ কোটি টাকা উল্লেখ করে সরকারের কাছে রিপোর্ট দেয়া হয়েছে। প্রকৃতপক্ষে এই ক্ষতি অপূরণীয় বলেও তারা মন্তব্য করেছেন ।
চট্টগ্রামের একজন কর্মকর্তা মাঠ পর্যায়ে পরিদর্শনের কথা উল্লেখ করে বলেন, আমনের ক্ষয়ক্ষতি এতো ব্যাপক হয়েছে যে বহু কৃষকই নিঃস্ব হয়ে গেছেন। চট্টগ্রাম জেলায় এবার ১ লাখ ২ হাজার হেক্টর জমিতে আমন চাষ করা হয়। এর মধ্যে বন্যায় তলিয়ে গেছে ৪৩ হাজার ৫শ হেক্টর জমির ফসল। তলিয়ে যাওয়া আমন ক্ষেতের মধ্যে ১৩ হাজার ৮৩১ হাজার হেক্টর জমির ধান সম্পূর্ণরূপে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। চট্টগ্রামে এই বন্যায় মোট ১ লাখ ৬১ হাজার ৩৭১ জন কৃষক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। যাদের অনেকেরই আর চাষাবাদ করার মতো সামথ্য নেই । আবার চলতি মাসেই আউশ ধান ঘরে তোলার কথা ছিল কৃষকদের । কিন্তু বন্যায় তাও নষ্ট করে দিয়েছে। চট্টগ্রামের বিভিন্ন উপজেলায় ৩৩ হাজার ১ হেক্টর জমিতে আউশের চাষ হয়েছিল। এরমধ্যে ৮ হাজার ৩৮৩ হেক্টর জমির ফসল পানিতে তুলিয়ে নষ্ট হয়ে গেছে । এতে কোটি কোটি টাকার ফসলহানী হয়েছে বলেও কৃষি বিভাগের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।
চট্টগ্রামে আমন এবং আউশ ধানের যে ক্ষতি হয়েছে তা খাদ্য ঘাটতির এই জেলাটিতে মারাত্মক রকমের প্রভাব ফেলবে বলে মন্তব্য করে বলা হয়েছে, এই ক্ষয়ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে কৃষকদের বেশ বেগ পেতে হবে।
সীতাকুণ্ডের জাফর নগর গ্রামের কৃষক মদিন উল্ল্যাহ দৈনিক আজাদীকে বলেন, আমি প্রায় দুই একর জমিতে আমন চাষ করেছিলাম। সব নষ্ট হয়ে গেছে। এখন আর চারা নেই যে নতুন করে লাগাবো। তিনি চারদিকের সব বীজতলা নষ্ট হয়ে যাওয়ায় চারার ভয়াবহ অভাব দেখা দিয়েছে বলেও উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, সরকার বিশেষ কোন উদ্যোগ নিয়ে আমাদের পাশে না দাঁড়ালে নতুন করে চাষাবাদ করে ঘুরে দাঁড়ানো সম্ভব হবে না। তিনি সহজ শর্তে ঋণের ব্যবস্থা করার জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানান ।
চট্টগ্রাম কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক আবদুচ ছোবহান দৈনিক আজাদীকে বলেন, ক্ষয়ক্ষতি ব্যাপক । তবে আমরা কিছুটা আশাবাদী যে, চট্টগ্রামে আমন ধান কিছুটা দেরিতে লাগানো হয়। আগামী ২৫ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত আমন লাগানো যাবে। তবে চারার যেই সংকট তা কাটিয়ে উঠা গেলে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকেরা কিছুটা হলেও ঘুরে দাঁড়াতে পারবেন বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন ।
গাড়ি আটকিয়ে ৬৫ ভরি স্বর্ণ ছিনতাই পটিয়ায় ২ জনের বিরুদ্ধে মামলা
৬৫ ভরি স্বর্ণ ছিনতাইয়ের ঘটনায় এক যুবদল নেতাসহ দুইজনের বিরুদ্ধে পটিয়া থানায় একটি মামলা করা হয়েছে। বুধবার (৪ সেপ্টেম্বর) রাতে কক্সবাজার এলাকার স্বর্ণ ব্যবসায়ী রুবেল কান্তি দাশ বাদী হয়ে পটিয়া থানায় এই মামলা করেন। এটি দৈনিক আজাদীর খবর।
পত্রিকাটির খবরে বলা হয়…
পটিয়ায় যাত্রীবাহী গাড়ি আটকিয়ে ও মারধর করে ৬৫ ভরি স্বর্ণ ছিনতাইয়ের ঘটনায় এক যুবদল নেতাসহ দুইজনের বিরুদ্ধে পটিয়া থানায় একটি মামলা করা হয়েছে। বুধবার (৪ সেপ্টেম্বর) রাতে কক্সবাজার এলাকার স্বর্ণ ব্যবসায়ী রুবেল কান্তি দাশ বাদী হয়ে পটিয়া থানায় এই মামলা করেন।
মামলার আসামিরা হলেন- পটিয়া পৌরসভা যুবদলের সিনিয়র সহ- সভাপতি মোহাম্মদ মামুন (৩৫) ও তার সহযোগী বিএনপি কর্মী মনির (৩০)।
তাদের দুইজনের বাড়ি পটিয়া পৌরসভার ১নং ওয়ার্ডের কাগজী পাড়া এলাকায়। পটিয়া থানা পুলিশ জানায়, কক্সবাজার জেলার ঈদগাঁও এলাকার স্বর্ণ ব্যবসায়ী রুবেল দাশের রিদি গোল্ড ফ্যাশন নামের একটি স্বর্ণের দোকান রয়েছে। তাদের দোকানের কারিগর রূপন দাশ গত ২৭ আগস্ট ২১ ক্যারেটের ৬৫ ভরি স্বর্ণ নিয়ে চট্টগ্রাম শহরে যাচ্ছিলেন। গাড়িটি পটিয়া বাইপাস সড়কের ফারুকী পাড়া পয়েন্টে আসলে পূরবী গাড়ির সামনে একটি মোটরসাইকেল ও একটি নোহা এসে পূরবী বাসকে গতিরোধ করে পিছনের সীটে বসা রূপন দাশকে ছাত্রলীগ কর্মী আখ্যায়িত করে টেনে হিঁচড়ে ও মারধর করে গাড়ি থেকে নামিয়ে ফেলেন। এক পর্যায়ে ছিনতাইকারীরা গলায় ছুরি ধরে তার ব্যাগে থাকা ৬৫ ভরি স্বর্ণ ছিনতাই করে নিয়ে পালিয়ে যায়। পরবর্তীতে ভিডিও ফুটেজ সংগ্রহ করে তাদের শনাক্ত করে থানা পুলিশ।
পটিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আবদুর রহিম সরকার জানান, এ ঘটনায় থানায় মামলা করা হয়েছে। এ মামলায় তদন্ত চলছে। ঘটনায় জড়িত কয়েক জনকে সিসিটিভি ফুটেজ দেখে চিহ্নিত করা হয়েছে। আশা করি জড়িতরা শীঘ্রই ধরা পড়বে।
চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা যুবদলের সাবেক সভাপতি বদরুল খায়ের জানিয়েছেন, দলের নাম ব্যবহার করে যারা চাঁদাবাজি, টেন্ডারবাজি, চুরি, ছিনতাই ও মানুষের ওপর জুলুম করবে তাদের স্থান বিএনপিতে নেই। ইতোমধ্যে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান স্পষ্ট ভাষায় তা জানিয়ে দিয়েছেন। তিনি আরও জানান, যারা অপকর্মে লিপ্ত থাকবে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য সিদ্ধান্ত ইতোমধ্যে হয়েছে।
ফেরত দিতে হবে ভুয়া বিলে আত্মসাৎ করা কোটি টাকা
ভুয়া বিল তৈরি করে আত্মসাৎ করা সরকারি টাকা ফেরত দিতে অভিযুক্তদের নির্দেশনা দিয়েছে রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের অর্থ উপদেষ্টার দপ্তর। এক মাসের মধ্যে রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের হিসাব শাখার ৭ কর্মকর্তা-কর্মচারীকে আত্মসাৎ করা প্রায় কোটি টাকা ফেরত দিতে বলা হয়েছে নির্দেশনায়। এটি দৈনিক আজাদীর খবর।
পত্রিকাটির খবরে বলা হয়…
ভুয়া বিল তৈরি করে আত্মসাৎ করা সরকারি টাকা ফেরত দিতে অভিযুক্তদের নির্দেশনা দিয়েছে রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের অর্থ উপদেষ্টার দপ্তর। এক মাসের মধ্যে রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের হিসাব শাখার ৭ কর্মকর্তা-কর্মচারীকে আত্মসাৎ করা প্রায় কোটি টাকা ফেরত দিতে বলা হয়েছে নির্দেশনায়।
সূত্র জানায়- ২০২৩ সালের ২৮ ডিসেম্বর রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের অর্থ উপদেষ্টার দপ্তর থেকে মেসার্স দি কসমোপলিটন কর্পোরেশনের নামে ভুয়া বিলে ৯৬ লাখ ৯০ হাজার টাকার একটি চেক পাস করা হয়। রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের হিসাব শাখার কয়েকজন কর্মকর্তা-কর্মচারী মিলে পুরো টাকা আত্মসাৎ করেন।
আত্মসাতের বিষয়টি ধরা পড়ার পর ঘটনা তদন্তে চট্টগ্রাম বিভাগীয় হিসাব কর্মকর্তা জয়শ্রী মজুমদারকে প্রধান করে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ। কমিটিকে ৭ দিনের মধ্যে প্রতিবেদন দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হলেও তদন্তে অনেক সময় নেওয়া হয়। সম্প্রতি রেলের হিসাব শাখার ৭ কর্মকর্তা ও কর্মচারী প্রতারণার মাধ্যমে অর্থ আত্মসাৎ করেছেন’ উল্লেখ করে তদন্ত রিপোর্ট দেওয়া হয়। ঘটনার পরপরই অভিযুক্ত কর্মকর্তা- কর্মচারীদের সাময়িক বরখাস্ত করা হয়।
এরপর গত ২৯ আগস্ট ৭ কর্মকর্তা-কর্মচারীর নাম এবং অর্থদণ্ডের টাকার পরিমাণ উল্লেখ করে অতিরিক্ত অর্থ উপদেষ্টা ও প্রধান হিসাব অধিকর্তা সার্বিক (পূর্ব) মো. সাইদুর রহমান সরকার স্বাক্ষরিত একটি চিঠি (স্মারক নম্বর-৪৩) জারি করা হয়। ৭ কর্মকর্তা-কর্মচারী হলেন মো. মামুন হোসেন, সৈয়দ সাইফুর রহমান, পবন কুমার পালিত, মো. আবু নাসের, শিমুল বেগম, ইকবাল মো. রেজাউল করিম ও মো. মাকসুদুর রহমান। চিঠিতে উল্লেখ করা হয়, মো. মামুন হোসেনকে সরকারের ক্ষতিসাধন টাকার মধ্যে ২০ শতাংশ অর্থাৎ ১৯ লাখ ৩৮ হাজার, সৈয়দ সাইফুর রহমানকে ১৯ লাখ ৩৮ হাজার, পবন কুমার পালিতকে ১৯ লাখ ৩৮ হাজার, মো. আবু নাসেরকে ১৪ লাখ ৫৩ হাজার ৫০০, শিমুল বেগমকে ৯ লাখ ৬৯ হাজার, ইকবাল মো. রেজাউল করিমকে ৮ লাখ ৭২ হাজার ১০০ ও মো. মাকসুদুর রহমানকে ৫ লাখ ৮১ হাজার ৪০০ টাকা অর্থদণ্ড দেওয়া হয়েছে। এসব টাকা আগামী ৩০ দিনের মধ্যে সরকারি কোষাগারে জমা দেয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
চাটগাঁর চোখ ডেস্ক