মইজ্যার টেকের ফ্যাক্টরি থেকে এস আলম পরিবারের বিলাস বহুল ১৪টি গাড়ি তিন শীর্ষ বিএনপি নেতার ছত্রছায়ায় সরানোয় বহুদুর জল গড়ানোর পর এবার আলোচনায় দলের আরেক শীর্ষ নেতা সালাউদ্দীনের ওই একই গ্রুপের গাড়িতে চড়ে বিশাল সংবর্ধনা নেয়ার কাহিনী।
ব্যাংক কেলেংকারিতে কাবু এস আলম গ্রুপ কর্ণধার সাইফুল আলম মাসুদ চতুর ব্যবসায়ী হিসেবে খ্যাত।খারাপ সময়ে বিএনপির ছায়ায় যেতে চাইছেন তিনি।
বিএনপির দক্ষিণের কিছু নেতাও খুলে দিলেন সুবিধার দ্বার।অতঃপর এস আলমের গাড়ি ঢুকে গেল বিএনপির ঘরে।এবার নতুন করে আলোচনায় বিএনপি নেতা সালাউদ্দীন ও এলাকার সংবর্ধনায় তার ব্যবহৃত গাড়ি।
নতুন তথ্য, এস আলমের মালিকানাধীন গাড়িতে চড়ে নিজ এলাকায় গিয়ে সংবর্ধনা নিয়েছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ও সাবেক যোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী সালাউদ্দিন আহমেদ।
গত বুধবার দুপুর পৌনে ১২টার দিকে ঢাকা থেকে কক্সবাজার বিমানবন্দরে পৌঁছান তিনি। এরপর দলের নেতাকর্মীদের গাড়িবহরের সঙ্গে পেকুয়ায় পৌঁছান।
এরই মধ্যে কক্সবাজার বিমানবন্দর থেকে সালাউদ্দিন আহমেদের গাড়িবহর পেকুয়ায় পৌঁছানোর বিভিন্ন ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে শেয়ার করেছেন বিএনপির নেতাকর্মীরা। এ রকম একটি ভিডিওতে দেখা যায়, যে গাড়িতে (জিপ) চড়ে সালাউদ্দিন আহমেদ কক্সবাজার থেকে পেকুয়ায় আসেন, সেটির নম্বর চট্ট মেট্রো ঘ-১১-১৫৩৩। এটি মিতসুবিশির স্টেশন ওয়াগন ব্র্যান্ডের জীপ। তিনি সামনে সিটে বসে হাত নেড়ে আশপাশের লোকজনকে শুভেচ্ছা জানাচ্ছেন।
বাংলাদেশ সড়ক পরিববহন কর্তৃপক্ষ (বিআরটিএ) চট্টগ্রাম সালাউদ্দিন আহমেদকে বহন করা গাড়িটি (চট্ট মেট্রো ঘ-১১-১৫৩৩) এস আলম গ্রুপের মালিকানাধীন বলে নিশ্চিত করেছেন এমন খবরও এসেছে গণমাধ্যমে।এটি এস আলম পাওয়ার প্ল্যান্টের নামে ২০১০ সালে নিবন্ধন করা। ঠিকানা লেখা আছে এস আলম ভবন, চট্টগ্রাম নগরের আছদগঞ্জ। এটি এস আলম গ্রুপের প্রধান কার্যালয়।
ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর ১০ বছরের বেশি সময় পরে গত বুধবার নিজ জেলা কক্সবাজারে যান সালাউদ্দিন। দুপুর পৌনে ১২টার দিকে ঢাকা থেকে কক্সবাজার বিমানবন্দরে পৌঁছান।
এরপর দলের নেতাকর্মীদের গাড়িবহরের সঙ্গে তার গ্রামের বাড়ি পেকুয়ায় পৌঁছান। সেখানে তাকে গণসংবর্ধনা দেওয়া হয়। এর আগে সালাউদ্দিন চকরিয়া শহীদ আবদুল হামিদ পৌর বাস টার্মিনালে বিএনপি আয়োজিত জনসভায় বক্তব্য দেন।জনাকীর্ন এ সংবর্ধনায় তাকে বহন করা কালো রঙের গাড়িটি তার বিশাল প্রাপ্তিতে যেন কালো কলঙ্ক রেখা এঁকে দিল।প্রশ্ন উঠেছে এ সময়ের সবচেয়ে সমালোচিত এ ব্যবসায়ী গ্রুপটি কিভাবে এত দ্রুত সময়ে বিএনপি নেতাদের সহানুভূতির ছায়াতলে পৌঁছে গেল।
এস আলম গ্রুপের চেয়ারম্যান সাইফুল আলমের মালিকানায় থাকা ছয়টি ব্যাংক কাহিনী ক্ষমতার পটপরিবর্তনের পর একে একে সামনে আসে।
পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডির) যখন এস আলম গ্রুপের কর্ণধার সাইফুল আলম মাসুদ ও তার সহযোগীদের বিরুদ্ধে ১ লাখ ১৩ হাজার ২৪৫ কোটি টাকা বিদেশে পাচারের অভিযোগ অনুসন্ধান শুরু করেছে তখন কিছু বিএনপি নেতার “গাড়ি কান্ডে” দল ক্ষুব্ধ এবং সাধারণ মানুষ আশাহত হয়েছেন বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকগন।
এমএ/ জই