বৃহস্পতিবার, ২৩ জানুয়ারি ২০২৫

চট্টগ্রামে বিএনপির বিক্ষোভ সমাবেশে আমীর খসরু

খালেদা জিয়াকে জেলে নিতে জড়িতরা শাস্তি ভোগ করবে

রাজনীতি ডেস্ক :

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির জন্য আমরা রাস্তায় নেমেছি।

যতদিন বেগম খালেদা জিয়া মুক্তি পাবে না, ততদিন গণতন্ত্র, ভোটের অধিকার, মানুষের জীবনের নিরাপত্তা থাকবে না, লুটপাট অব্যাহত থাকবে।

বেগম জিয়ার মুক্তির সঙ্গে বাংলাদেশের মানুষের মুক্তি অঙ্গাঅঙ্গিভাবে জড়িত। অনেক হয়েছে অনেক শুনেছি, অনেক দেখেছি। আর সইবো না। বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্তি দিতে হবে।

আর যারা বেগম খালেদা জিয়াকে জেলে বন্দি করেছে ক্ষমতা কেড়ে নেয়ার জন্য। বেগম খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা সাজিয়েছে এবং সেই মামলার মাধ্যমে জেলে পাঠানো থেকে শুরু করে যারা জড়িত সবাইকে অপরাধের শাস্তি ভোগ করতে হবে।

ওরা অপরাধী, অপরাধ করেছে। বেগম খালেদা জিয়া কোন দুর্নীতি করে নাই। যে ট্রাস্টের কথা বলা হয়েছে, সেই ট্রাস্ট থেকে একটি পয়সাও বেগম খালেদা জিয়া অথবা তার পরিবারের কোন সদস্য নেয় নাই। সব টাকা ব্যাংকে জমা আছে, সুদে আসলে চার গুণ হয়েছে এখন।

শনিবার (৬ জুলাই) বিকালে কাজীর দেউরী নাসিমন ভবনস্থ দলীয় কার্যালয়ের সামনে নুর আহম্মেদ সড়কে আয়োজিত বিক্ষোভ সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবীতে চট্টগ্রাম মহানগর, উত্তর ও দক্ষিণ জেলা বিএনপির উদ্যোগে কেন্দ্র ঘোষিত এ বিক্ষোভ সমাবেশের আয়োজন।

বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান বরকত উল্লাহ বুলুর সভাপতিত্বে ও বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক ও বিভাগীয় সমন্বয়কারী মাহবুবের রহমান শামীমের পরিচালনায় সমাবেশে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা গোলাম আকবর খোন্দকার, এস এম ফজলুল হক, মহানগর বিএনপির সাবেক আহবায়ক ডা. শাহাদাত হোসেন, কেন্দ্রীয় বিএনপির শ্রম সম্পাদক এ এম নাজিম উদ্দীন, মহানগর বিএনপির সাবেক সদস্য সচিব আবুল হাশেম বক্কর, কেন্দ্রীয় বিএনপির সহ সাংগঠনিক সম্পাদক ভিপি হারুনুর রশীদ, ব্যারিস্টার মীর মোহাম্মদ হেলাল উদ্দিন, কেন্দ্রীয় সদস্য সাথী উদয় কুসুম বড়ুয়া, দক্ষিণ জেলা বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম আহবায়ক এনামুল হক এনাম।

আমীর খসরু বলেন, বেগম খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে যে মামলা দিয়েছে। তাকে একবার পাঁচ বছরের একবার দশ বছরের। ভেবে দেখুন কত বড় অপরাধ তারা করেছে।

বাংলাদেশের কোন আইনে বেগম খালেদা জিয়ার শাস্তি হয় না। বাংলাদেশের সংবিধানে যে কথাগুলো বলা আছে সে অনুযায়ী বেগম খালেদা জিয়ার শাস্তি হয় না।

জাতীয সংঘের আন্তর্জাতিক মানবাধিকার ডিক্লারেশন অফ হিউম্যান রাইটসে পরিষ্কারভাবে বলা আছে এই অপরাধ কোন দণ্ডনীয় অপরাধ নয়।

তিনি বলেন, দেশ আজকে যেখানে এসে দাঁড়িয়েছে এই দেশকে মুক্ত করার জন্য। দেশের গণতন্ত্র ফিরানোর জন্য, মানবাধিকার ফিরিয়ে আনার জন্য, গণমাধ্যমের স্বাধীনতা ফিরিয়ে আনার জন্য, বাকস্বাধীনতা ফিরিয়ে আনার জন্য যে নেত্রী স্বৈরাচার এরশাদের বিরুদ্ধে শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত এককভাবে আন্দোলন করেছেন।

উনাকে দেখেছি না আমরা, উনি কি কারো সাথে হাত মিলিয়ে ছিল? অন্য নেত্রী এরশাদের সাথে সাথে হাত মিলিয়ে নির্বাচন করেছিল।

বেগম খালেদা জিয়া কোন আপোষ করেন নাই। শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত নিজের জীবনবাজী রেখে এরশাদের বিরুদ্ধে আন্দোলন করেছিল। এরপর স্বৈরাচারের পতন ঘটিয়েছে। এই নেত্রী গণতন্ত্রের মা দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া।

তিনি বলেন, নির্বাচনের আগে আমাদের আন্দোলন, আমাদের জনগণ ও নেতা কর্মী যত না শক্তিশালী ছিল। আজকে আমরা তার চেয়ে বেশি শক্তিশালী।

এইবারের ধাক্কা সামলাতে পারবেন না। বলে না, চোরের ১০ দিন গৃহস্থের একদিন, সেই দিন চলে এসেছে। আজকে সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে, হাতে হাত মিলিয়ে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে শেখ হাসিনার রেজিমকে পরাজিত করতে হবে।

আমীর খসরু বলেন, যারা এ সরকারের পক্ষে কাজ করছে। তাদের কিছু সংবাদপত্র আছে, বুদ্ধিজীবী আছে। তারা বলছে কি জানেন! ওই ২৮ অক্টোবর ঢাকাতে আমাদের বিশাল জনসভা।

সে জনসভায় গুলি মেরে, গ্রেনেড মেরে, টিয়ারগ্যাস মেরে ২০ থেকে ৩০ লক্ষ মানুষের জনসভা তারা সেদিন বন্ধ করে দিয়েছে। এজন্য অনেকে বলে, আন্দোলন কি আবার তাহলে নতুন করে শুরু হবে। না, আন্দোলন চলমান আছে। ওই গুলি করে, গ্রেনেট মেরে জনসভা বন্ধ করলে আন্দোলন বন্ধ করা হয় না। আর ভোট চুরি করে ডামী নির্বাচন করে কেউ যদি মনে করে, আন্দোলন শেষ হয়ে গেছে অথবা বিএনপিকে নতুন করে শুরু করতে হবে।

আমি পরিষ্কারভাবে বলছি, নতুন করে শুরু করার কিছু নাই। আন্দোলন চলমান আছে। আন্দোলনের ভয়ে প্রধানমন্ত্রী সকাল বিকাল কি ধরনের মন্তব্য করে বুঝতে পারছেন না। কারণ ওরা জানে বাংলাদেশের ৯৫ শতাংশ মানুষ তাদের নির্বাচন বয়কট করেছে।

পরবর্তীতে উপজেলা নির্বাচন ও বয়কট করেছে। তারা জানে ওই নির্বাচন করে কোন লাভ হয়নি। ওই সভা বন্ধ করে কোন লাভ হয়নি। আবার সভা হবে, আবার মিছিল হবে, আবার লক্ষ জনতা একসঙ্গে হবে।

তিনি বলেন, একটা কথা আছে, অন্যায় যখন আইনে পরিণত হয়, প্রতিরোধ তখন অপরিহার্য। বাংলাদেশে কোন বিচার আছে? নাই। যেখানে কোন বিচার নাই এখানে প্রতিবাদ করে কোন লাভ আছে। তাহলে প্রতিরোধ করতে হবে।

আমরা সবাই প্রস্তুত, নেতা কর্মীরা কেউ হাল চাড়ে নাই। ঘরবাড়ি ভেঙেছে, ব্যবসা হারিয়েছে, চাকরি হারিয়েছে, জীবন দিয়েছে মামলার পর মামলা করে যাচ্ছে। পুলিশের হেফাজতে মৃত্যুবরণ করেছে, জেলে বিনা চিকিৎসায় মৃত্যুবরণ করেছে। কেউ হাল ছাড়ে নাই, আরো বেশি শক্তিশালী হয়েছে।

আমির খসরু বলেন, ১/১১ পরে সামরিক শাসন চালিত যে একটি সরকার ছিল। তারা নির্বাচন করেছে। তারা বেগম খালেদা জিয়াকে অনুরোধ করেছিল, তাদের অন্যায় এবং রাষ্ট্র দখলের বিষয়টা মেনে নেয়ার জন্য। যেটি শেখ হাসিনা মেনে নিয়েছে। বেগম খালেদা জিয়া মানেন নাই। জেল কেটেছে, এখনো জেল কাটছে। আরেক স্বৈরাচারীর বিরুদ্ধে লড়াই করতে গিয়েই জেল কাটছেন।

ডা. শাহাদাত হোসেন বলেন, বাংলাদেশের রাজনৈতিক ইতিহাসে বেগম খালেদা জিয়া এক কিংবদন্তী নারী। যিনি বাংলাদেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্বের প্রতীক হয়ে উঠেছেন।

তিনি ২০০৮ সালে চট্টগ্রামের লালদিঘীর মাঠ থেকে দেশ বাঁচাও, মানুষ বাঁচাও, স্লোগান শুরু করেছিলেন। আজকে তারেক রহমান ঘোষণা দিয়েছেন, আমার অধিকার, আমার দেশ, টেক ব্যাক বাংলাদেশ।

আজকে আমরা দেখতে পাচ্ছি, আজিজ বেনজীর সহ মাফিয়ারা বাংলাদেশকে খামচে ধরেছে। ওয়ান ইলাভেনের সময় বিএনপি নেতাকর্মীরা রাজপথে ছিল। আবারো গণতন্ত্র ও বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির জন্য ঐক্যবদ্ধভাবে রাজপথে নামতে হবে।

চচ/আরপি

সর্বশেষ

এই বিভাগের আরও খবর