মঙ্গলবার, ১০ সেপ্টেম্বর ২০২৪

মাছ ব্যবসায়ীদের ৩ কোটি টাকা আত্মসাৎ,বিমান বন্দরে ধরা মূল হোতা

চট্টগ্রামের সদরঘাট স্ট্যান্ড রোডের মাছ ব্যবসায়ীদের প্রায় তিন কোটি টাকা আত্মসাতের মামলায় এনএন ফিশ প্রতিষ্ঠানের মালিক মোহাম্মদ ইসমাইল হোসেনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

শুক্রবার (২১ জুন) দুপুরে তাকে হযরত শাহ্ জালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের ইমিগ্রেশন শাখা থেকে তাকে গ্রেফতার করে নিয়ন্ত্রণে নেন সিএমপির সদরঘাট থানা পুলিশ।

গ্রেপ্তার ইসমাইল হোসেম স্ট্যান্ড রোডের এনএন ফিশ প্রতিষ্ঠানের স্বত্বাধিকারী। তিনি কর্ণফুলী উপজেলার চরলক্ষ্যা সৈন্যেরটেক এলাকার বাসিন্দা।

বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সদরঘাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি মো. ফেরদৌস জাহান।

জানা যায়, গত ২ ফেব্রুয়ারি মোহাম্মদ হাবিব নামে এক মাছ ব্যবসায়ি তিন কোটি টাকা প্রতারণার অভিযোগ তুলে তিনজনের বিরুদ্ধে সদরঘাট থানায় একটি মামলা দায়ের করেন।

মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, গত ফেব্রুয়ারি মাসে ইসমাইল কয়েক দফায় হাবিবের কাছ থেকে ৮০ লাখ টাকার সামুদ্রিক মাছ কেনেন।

এরমধ্যে দুই দফায় ৩০ লাখ টাকা পরিশোধ করেন। বাকি ৫০ লাখ টাকা গত ১৯ ফেব্রুয়ারি পরিশোধ করার কথা ছিল।

ওইদিন হাবিবের ম্যানেজার সাদ্দামকে টাকার জন্য পাঠালে ইসমাইলের প্রতিষ্ঠান এন এন ফিশের অফিস তালাবদ্ধ দেখতে পান। মুঠোফোনও বন্ধ করে দেন ইসমাইল। এরপর থেকে তার খোঁজ মেলেনি।

আরও জানা যায়, সদরঘাট এলাকায় এন এন ফিশ প্রতিষ্ঠানের মালিক ইসমাইল মৎস্য ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে মাছ কিনে দেশের বিভিন্ন জায়গায় সরবরাহ করতেন। নোমান ও সাগর কমিশনে তার ব্যবসার দেখাশোনা করতেন।

সর্বশেষ চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে বিভিন্ন মাছ ব্যবসায়িদের কাছ থেকে প্রায় তিন কোটি টাকার মাছ কেনেন ইসমাইল। এরপর তিনি গা ঢাকা দেন।

পরে ব্যবসায়ীরা নোমান ও সাগরের কাছে পাওনা টাকা চাইতে গেলে তারাও টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানান। ওই মাসেই ইসমাইলকে প্রধান আসামি করে সদরঘাট থানায় একটি মামলা করা হয়।

ওই মামলায় গত ৯ মে ভোরে কর্ণফুলী উপজেলার চরপাথরঘাটা এলাকা থেকে এজাহারভুক্ত ইসমাইলের কর্মচারী আল আমিন প্রকাশ নোমান (৩৯) ও ম্যানেজার কাউছার আহাম্মদ সাগরকে (৩৫) গ্রেফতার করেন।

পরে ব্যবসায়িরা নিশ্চিত হন ইসমাইল বিপুল পরিমাণ টাকা আত্মসাৎ করে দুবাই চলে গেছেন। আজ শুক্রবার সকালের দিকে ঢাকা বিমানবন্দরের ইমিগ্রেশন পুলিশ তাকে গ্রেফতার করে দুপুরে সদরঘাট থানার পুলিশকে হস্তান্তর করেছে।

কর্ণফুলী মৎস্য ব্যবসায়ী সমবায় সমিতি লি. এর সভাপতি আবু ইউছুপ বলেন, ‘বিশ্বাসের উপর আমাদের মাছের ব্যবসা হয়। কিন্তু ব্যবসায়িদের ৩ কোটি টাকা আত্মসাৎ করে ইসমাইল বিদেশে পালিয়ে ছিলেন।’

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা সদরঘাট থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) অর্ণব বড়ুয়া বলেন, ‘ইসমাইল প্রথমে এক হাতে ব্যবসা পরিচালনা করলেও পরে সেটা তার শ্যালক নয়ন ও ভাগ্নে সাগরকে নিয়ন্ত্রণের দায়িত্ব দেন। মাছ ব্যবসায়ীরা তাদেরকেই চিনতেন বেশি।

‘ইসমাইল শুধু ব্যবসায়ীদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখতেন, কিন্তু তিনি তিন কোটি টাকার মাছ বাকিতে কিনে দুবাই পালিয়ে গিয়েছিলেন। আমরা তাকে গ্রেপ্তারের জন্য ইমিগ্রেশনে আবেদন করেছিলাম।’

এ প্রসঙ্গে সিএমপি সদরঘাট থানার পরিদর্শক (ওসি) ফেরদৌস জাহান বলেন, ‘মাছ ব্যবসায়ী হাবিবের দায়ের করা মামলায় আগে দুজনকে আমরা গ্রেপ্তার করেছিলাম।

প্রধান আসামি ইসমাইলকে ঢাকা বিমানবন্দরের ইমিগ্রেশন পুলিশ গ্রেপ্তার করেছেন। আমরা ফোর্স পাঠিয়ে তাকে সদরঘাট থানায় নিয়ে এসেছি।

চচ/আরপি

সর্বশেষ

এই বিভাগের আরও খবর